বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহে মোটামুটি তিনটি স্তর রয়েছে। শৈশব, যৌবন ও বার্ধক্য। এই তিনকালের মধ্যে সকল বিবেচনায় যৌবনকাল হলো শ্রেষ্ঠ সময়। যৌবনকালেই মানুষ অসাধ্য সাধনে আত্মনিয়োগ করতে পারে। তাই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমাদেরকে যৌবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য ব্যয় করতে হবে। তিনি সুখী-সমৃদ্ধ, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে যুবসামাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
তিনি আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণ আয়োজিত আন্তর্জাতিক যুবদিবস উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জেলা আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল জব্বার। আরো বক্তব্য রাখেন জেলা সেক্রেটারি শাহিনুর ইসলাম, সহকারি সেক্রেটারি এ বি এম কামাল হোসাইন ও ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মাঈনুল ইসলাম প্রমুখ।
ড. মাসুদ বলেন, একজন মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সোনালি সময় হলো যৌবনকাল। আর এটি আল্লাহর দেয়া বড় নেয়ামত। তাই এই নেয়ামতের যথাযথ শুকরিয়া আদায় করতেই যৌবনেই আত্মগঠন, সমাজ পরিবর্তন এবং আর্ত-মানবতার কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। মহানবি স. নবুয়তের আগেই যৌবনকালে হিলফুল ফুজুল গঠন করেছিলেন মানুষের সেবা করার জন্য। যৌবনকালই হলো কর্মসম্পাদন ও নেক আমল করার মুখ্য সময়। আর এ সময় ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদাতের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। হাশরের ময়দানে যৌবনকালের কাজের হিসাবই গ্রহণ করা হবে সবার আগে। তাই যৌবনকেই যথাযথভাবে লাগিয়ে মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাফেজ মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, রাসূল সা. যৌবনকালকে গণিমতের মাল তথা মূল্যবান সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে তা মূল্যায়নের তাগিদ দিয়েছেন। কেননা, এ সময় সম্পর্কে পরকালে আল্লাহর কাজে জবাবদিহি করতে হবে। হাদিসে রাসূলে সা.এসেছে, রাসূল সা. বলেছেন, পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্তুকে গণিমত মনে করো। যথা- ১. তোমার বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে, ২. পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে, ৩. দারিদ্র্যতার পূর্বে সচ্ছলতাকে, ৪. ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে ও ৫. মৃত্যু পূর্বে জীবনকে।’ (তিরমিজি) তাই জীবনের অতিগুরুত্বপূর্ণ সময় তারুণ্যকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন বলেন, আল্লাহ প্রদত্ত যৌবনের এই মহামূল্যবান সময়কে আল্লাহ হুকুম মতো পরিচালনা করতে হবে। যৌবনের এই সোনালি সময়ে মানুষের দেহ থাকে সুস্থ, সবল, শক্ত ও উদ্দীপনায় পূর্ণ। এ সময় তার হাতে থাকে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত সময়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অধিকাংশ মানুষই তা সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করে না। হাদিস শরিফে এসেছে, নবী করিম সা. ইরশাদ করেছেন, দু’টি নিয়ামতের বিষয়ে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে। তাহলো- সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য। (সহিহ বোখারি- ৬৪১২) তাই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হলে আমাদেরকে যৌবন ও তারুণ্যের হক যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।