বাউফল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং বাউফলের গণমানুষের নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বাউফল উপজেলায় সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ কোর্সের (৬ষ্ঠ ও ৭ম ব্যাচের) সমাপনি এবং নতুন আরও দু’টি ব্যাচের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমাদের প্রিয় বাউফল উপজেলার দু’টি ইউনিয়ন ধূলিয়া ও মদনপুর ইউনিয়নে আজ প্রিয় বোনদের সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ কোর্সের ৬ষ্ঠ ও ৭ম ব্যাচের সমাপনি করতে পেরে আমি মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। আমরা কোনো কাজই দুনিয়ার জন্য করি না, আমাদের সকল কাজই মহান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য। পুরো বাউফল উপজেলার মানুষকে আমার পরিবারের অংশ মনে করি। সেই পরিবারের কেউ যখন একটু কষ্টে থাকেন তখন আমি ব্যথিত হই। এ ধরনের সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্সে আমাদের রাজনৈতিক কোনো স্বার্থ হাসিলের জন্য নয়, বরং সমাজকল্যাণের অংশ হিসেবে গোটা বাউফল উপজেলাবাসীকে সাবলম্বী বা আত্মমর্যাদাশীল হিসেবে গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য। এর মাঝেও যদি মহান আল্লাহ তায়ালা এই বাউফল উপজেলাবাসীর কল্যাণে বড় কোনো পরিসরে কাজ করার সুযোগ দেন, সেটা মহান আল্লাহর একান্ত মেহেরবানী। কল্যাণমূলক কাজের নির্দেশনা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে। তিনি যদি সন্তুষ্ট হয়ে যান সেটাই আমাদের বড় অর্জন। নেতা বা দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে ব্যক্তি বাছাই করে নেন। বাউফলের জনগণের কল্যাণে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আমরা পাশে আছি। আমাদের মায়েরা আমাদের জন্য কতটা কষ্ট করেছেন আমরা দেখেছি। আমাদের বাবারা কঠোর পরিশ্রম করে এই বাউফলে আমাদেরকে বড় করেছেন। তাদের কষ্ট গুলো আমরা উপলব্ধি করতে পারি। এখানে আমাদের মায়েদের অবদান অনেক বেশি। এসব মা-বোনদেরকে আমরা সেলাই মেশিন তুলে দিয়ে, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে, নিজ পরিবারে আরও একটু সচ্ছলতা ফেরাতে চেষ্টা করছি। আমাদের এই বাউফলকে তৈরি করার জন্য মা বোনেরা শুধু পরিবারের কারিগর নন, তারা শুধু এই সমাজের কারিগর না, এই মায়েরা একটা রাষ্ট্রের কারিগর। মায়েরা পিছন থেকে নেপথ্যে থেকে একটা গৌরবদৃপ্ত সন্তান জাতিকে উপহার দিতে পারেন। একটা সন্তান তৈরি করেন মানে তিনি একটা রাষ্ট্র তৈরি করেন। ইসলাম বোনদের জন্য মায়েদের জন্য, নারীদের জন্য এ জাতীয় শরিয়াতের বিধান অনুসরণ করে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছে। আজকে দেশে তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে, নারীবাদীদের নামে যারা কথা বলেন, কাজ করেন তারা মূলত নারীদের অসম্মান লজ্জায় ফেলে দেওয়ার কাজে লিপ্ত। এরা নারীদেরকে খেলনার বস্তুতে পরিণত করে ইসলামের বিরুদ্ধে অপ্রচেষ্টায় সদা ব্যস্ত রয়েছেন। সরকারের মন্ত্রী বলছেন আমাদের পরিবর্তে অন্য কেউ দেশের ক্ষমতায় আসলে মহিলাদের বোরকা পরতে বাধ্য করবে। আশ্চর্য ইসলাম তো মা বোনের সুরক্ষায় বোরকা পরতে বলেছেন। এর অর্থ হচ্ছে এসব সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা সরাসরি ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ বক্তব্য এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ কোর্সের ৮ম ও ৯ম ব্যাচের উদ্বোধন করে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাউফল ফাউন্ডেশন সমাজ পরিবর্তনের একটি প্রতিশ্রুতিশীল সমাজকল্যাণমূলক সংগঠন। আমরা আমাদের প্রিয় বাউফলকে নিয়ে কাজ অব্যাহত রেখেছি। মূল লক্ষ্য হচ্ছে এই সমাজকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে আমরা দেশে একটি ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে চাই। সেটার জন্য প্রথমত কিছু সৎ দক্ষ ও যোগ্য মানুষকে সমাজের নেতৃত্বে নিয়ে আসা খুব জরুরি। কিছু ভালো পরিবার যেমন কিছু ভালো মানুষ উপহার দেয়, অনুরূপ ভাবে ঐ ভালো পরিবার গুলো একত্রে একটি সমাজ গড়ে তুলতে পারে। সেই ভালো সমাজ গুলোই প্রকৃত অর্থে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। সেই রাষ্ট্র বিনির্মাণে আমাদের প্রচেষ্টা কেবল তখনই সফল হতে পারে। যখন আমাদের চেষ্টা, দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যোগ পরিপূর্ণ ভাবে আল্লাহর দেওয়া ইসলামের বিধানের আলোকে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ জীবনের সকল ক্ষেত্রে হুকুম বা আইন চলবে কেবল সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর, সৃষ্টি যার আইন তার।
এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাউফল উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক খালিদুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পটুয়াখালী জেলা সভাপতি আলী আজগর, সাবেক জেলা সভাপতি মাহফুজ হোসাইন, কবির হুসাইন, সাবেক আইন সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, বাউফল উপজেলা জামায়াতের বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুল্লাহ, ছাত্রশিবির বাউফল পূর্ব সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ছাত্রশিবির বাউফল দক্ষিণ সভাপতি জুবায়ের হুসাইন, বাউফল পশ্চিম সভাপতি হাফেজ আরিফুর রহমান, বাউফল উত্তর সভাপতি কামরুল ইসলাম সহ উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ আরও বলেন, আমরা প্রশিক্ষণ নেবো, স্বাবলম্বী হবো। বাউফল উপজেলাবাসীকে কর্মমূখী ও আয় উপার্জনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করতে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভাইদের পাশাপাশি বোনেরাও যেন স্বাবলম্বী হয়ে নিজ পরিবারের সচ্ছলতা আনতে ভূমিকা রাখতে পারেন সেটাই আমাদের লক্ষ্য। দুনিয়ার জীবনযাপন সহজ করে আখেরাতের পাথেয় অর্জনেও যেন এসব ভাই বোনেরা অগ্রগামী হতে পারেন সেই দোয়া করছি। কর্মমূখী হওয়ার সাথে সাথে প্রত্যেকে যেন আল্লাহ মুখী জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হন সেই প্রত্যাশা রাখছি।