বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কর্মপরিষদের সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার পক্ষের শক্তিকে ভোট দিতে হবে। তিনি উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, দুটি চোখ এক মিনিট বন্ধ করে চিন্তা করে দেখুন স্বাধীনতার পরবর্তী গত ৫৩ বছরে ১২টি সংসদ নির্বাচনে যাদের ভোট দেওয়া হয়েছে তারা ভোটারের জন্য, দেশের জন্য বা জাতির জন্য কি করেছে? – তাদেরকে ভোট দিয়ে নিজের ভোট পঁচানো হয়েছে। আর নিজের ভোট না পঁচিয়ে এমন ব্যক্তি, এমন দলকে ভোট দিতে হবে, যারা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে। যারা ক্ষমতায় বসে নিজেদেরকে শাসক আর জনগণকে দাস মনে করবে না। বরং মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শে তারা নিজেদেরকে জনগণের খাদেম হিসেবে নিয়োজিত করবে।
শুক্রবার (০১ নভেম্বর) বাউফল উন্নয়ন ফোরাম – বরিশাল কর্তৃক আয়োজিত প্রীতি সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বরিশাল বিভাগীয় সাবেক স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে অনুষ্ঠিত প্রীতি সমাবেশে দলমত নির্বিশেষ বাউফল উপজেলা ও বরিশাল অঞ্চলের জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, মানুষের তৈরি জনগণকে শোষণের সংবিধান জনগণ মানে না। আগামীতেও আর মানবে না। মানব রচিত সংবিধান কেবলমাত্র ক্ষমতাসীনদের কল্যাণে রচিত হয়, মানুষের কল্যাণে নয়। অতিতে যখন যারা ক্ষমতায় গিয়েছে তারা তাদের মত করে সংবিধান তৈরি করেছে। সংবিধানের দোহাই দিয়ে তারা শাসক আর মালিক হয়েছে, জনগণকে দাস বানিয়ে রেখেছিল। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনের ফলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ ১১ জন নেতাকে বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। ২০ হাজার মামলায় জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীর উপর অমানবিক জুলুম নির্যাতন করেছে। বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। রিমান্ডে নিয়ে বহু নেতাকর্মীকে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমাকে দুই শতাধিক সাজানো মামলায় আসামী করে ৬৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালিয়েছে। সাড়ে ৫ বছরের ফরমায়েশী দন্ড দিয়েছে। আমার স্ত্রী ডাক্তার জাকিয়া ফারহানাসহ আমার পরিবারের সদস্যের উপরও তারা হামলা মামলা দিয়ে জুলুম-নির্যাতন করেছে। আমাকে তারা বাউফলবাসী থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে। কিন্তু আমি একদিনের জন্যও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম না। আমার নির্দেশে বাউফল উন্নয়ন ফোরাম ও বাউফল ফাউন্ডেশনের নেতাকর্মীরা জনগণের যে কোন প্রয়োজনে পাশে ছিল। আগামীতেও আমি বাউফলবাসীর পাশে থাকবো।
ড. মাসুদ বাউফলবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আগামীতে বাউফলে কোন সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না, সকলে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সমান মর্যাদা ও অধিকার ভোগ করবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ ও সমাজ পরিচালিত হবে। আগামীতে রাজনৈতিক ইন্ধনে মাদক ও অস্ত্রের খেলা আর কাউকে খেলতে দেওয়া হবে না। মাদক ও অস্ত্রমুক্ত বাউফল গঠনে তিনি বাউফলবাসীর কাছে সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। তিনি আরো বলেন জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন দিলে বাউফলের সাড়ে চার লাখ মানুষ প্রত্যেকেই এমপি হবেন। এক ব্যক্তি এমপি হবে না। জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত ব্যক্তি জনগণের ভোটে এমপি হয়ে শাসক হবে না, জনগণের খাদেম হবে। কোন শিক্ষিত যুবক চাকুরী খুঁজবে না, প্রত্যেককে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করা হবে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াত ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য কামরুল আহসান হাসান, ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম, বাউফল ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি এডভোকেট আবুল কাশেম, বরিশাল মহানগরী শিবির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী জেলা শিবির সভাপতি মেহেদী হাসান, বাউফল উপজেলা শিবির সভাপতি লিমন হোসাইন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি মো. জুলহাস উদ্দিন, ছাত্র প্রতিনিধি নাঈম শাকিল, বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের শিক্ষার্থী সাইমুন সুরমা, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রব, মোঃ শহিদুল ইসলাম, আশিকুল হায়দার মানিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।