বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, চাঁদাবাজ ও দখলদারিত্বকে বাংলাদেশের মানুষ আর গ্রহণ করবে না। দেশে রাজনীতির একটা গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর আধিপত্যবাদ মানুষ পছন্দ করে না। আগামীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়, যে রাষ্ট্রে প্রত্যেক নাগরিক হবে রাষ্ট্রের একজন সম্মানিত নাগরিক। তাদের সামনে কোনো জুলুমকারী শাসক থাকবে না, শাসক যিনি হবেন তিনি হবেন সেবক। সেই সেবক হওয়ার কাজে সকলে জামায়াতের সাথে থেকে দায়িত্ব পালন করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, এদেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। রিমান্ডে নির্যাতন, হাত- পা হারিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করে আমরা এদেশের জনগণের কল্যাণেষ কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আজ জুমাবার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের খিলগাঁও পূর্ব থানার উদ্যোগে স্থানীয় বালুর মাঠে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও খিলগাঁও পূর্ব থানা আমীর মোহাম্মদ শাহজাহান এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পূর্ব সভাপতি মোজাফফর হোসেন, মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা মনির বিন আনোয়ার, এস এম মাহমুদ হাসান, সালেহ আহমদ, মাওলানা আব্দুল বারী, নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমাদের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলানো হয়েছে। তিনি কর্মীদের সম্মেলন থেকে ৩টি কাজের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা বলেন। এক. এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কর্মীদের চূড়ান্ত ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ একামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত মানুষের প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না। মানুষের কাছে এ স্লোগান পৌঁছে দিতে হবে – সমস্ত তন্ত্র-মন্ত্রের দিন শেষ আগামীর বাংলাদেশ ইসলামের বাংলাদেশ। কেবল ইসলামই হচ্ছে সবার জন্য সবচেয়ে বিশ্বস্ত নিরাপত্তার বিধান। দুই. দেশে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় যারা সহায়ক তাদেরকে বেঁছে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা যেমন মসজিদে গিয়ে নামাজে ইমামতি করবে বাহিরেও তারা সমাজে যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে এগিয়ে থাকবে। তিন. দ্বীনের দাওয়াত সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। মুক্ত ও সুন্দর যে পরিবেশ আল্লাহ আমাদের উপহার দিয়েছেন তার যথাযথ ব্যবহার আমাদের করতে হবে। নতুন করে আর আমরা এই বাংলাদেশকে জাহিলিয়াতের দিকে নিয়ে যেতে দেবো না। ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আমরা জীবন ও সম্পদ বাজি রাখতে সকলে প্রস্তুত আছি। ইসলামের আলোকে বাংলাদেশকে পরিচালনা করতে নবী (সা) এর মদিনা রাষ্ট্রের অনুকরণে এখানে সোনার মানুষ তৈরি করে সত্যিকার সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য প্রয়োজনে আমাদের শরীরের রক্ত, চোখের পানি ও ঘাম ঝরানোর জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। মহান আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের সাথে সম্পর্কিত নয় বরং প্রত্যেক ব্যক্তির ত্যাগের সাথে সম্পর্কিত। যোগ্যতার ভিত্তিতে আল্লাহ তায়ালা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে কবুল করেছেন। এদেশের আপামর জনগণ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আমাদেরকে দিলে যোগ্যতার ভিত্তিতেই জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা দেশ পরিচালনায় আত্মনিয়োগ করবে।
এর আগে তিনি ব্যাংকার্স কল্যাণ ফোরাম (বিকেএফ) ইউনিট দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও ব্যাংকার্স কল্যাণ ফোরামের সভাপতি মুহা. আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে শিক্ষাশিবিরে আরও উপস্থিত ছিলেন মতিঝিল জোন পরিচালক মু. জালাল উদ্দীন, ব্যাংকার্স কল্যাণ ফোরামের সেক্রেটারি মো. মোকলেসুর রহমান, টিম সদস্য মো. মনির হোসেন, মো. গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, প্রমুখ।
এরপরে মতিঝিল পূর্ব থানার উদ্যোগে রাজধানীর গোপীবাগে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। মতিঝিল পূর্ব থানার আমির ও মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য নুর উদ্দিনের সভাপতিত্বে মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবা টিমের নেতৃত্ব প্রদান করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেন।