বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে একটি সফল ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক এলাকা। দেশ পরিচালনার অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এখানে রয়েছে। সচিবালয়, জর্জকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় থেকে শুরু করে দেশের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এলাকায় অবস্থিত। সেই গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মূল দায়িত্বশীল থানা আমীর ও সেক্রেটারীগণ আজ এখানে একত্রিত হয়েছেন। আপনাদের মনে রাখতে হবে দেশের মূল প্রশাসনিক অঞ্চল বা এলাকা যখন আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় তখন সারাদেশে তখন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সফলতা চলে আসে। তাই সংগঠনের সে লক্ষ্য পূরণে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে কঠিনভাবে চাষাবাদ করতে হবে। বর্তমানে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও নাজুক পরিস্থিতিতে জনগণের অধিকার সুনিশ্চিত করতে মুল দায়িত্বশীলদেরকে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হবে এবং জনগণ তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে থানা আমীর/সভাপতি ও সেক্রেটারিদের নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় শিক্ষা শিবিরে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি যথাক্রমে এডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিন ও মুহা. দেলাওয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, ফরিদ হোসাইন, মাওঃ ফরিদুল ইসলাম, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, অধ্যাপক নুরুন্নবী মানিক, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, জয়নাল আবেদিন, হাফিজুর রহমান, আবু আহনাফ, মাওঃ মোশাররফ হোসাইন, শেখ শরিফ উদ্দিন আহমদ সহ মহানগরীর বিভিন্ন থানার আমীর-সেক্রেটারী ও বিভিন্ন পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি ও সেক্রেটারীবৃন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এলাকায় প্রায় এক কোটি বিশ লক্ষ মানুষের বসবাস। এই অঞ্চলে বসবাসকারী প্রত্যেক মানুষের কাছে আমাদেরকে ইসলামের সু-মহান আদর্শের আহবান পৌছিয়ে দিতে হবে। সমাজের কেবল নির্দিষ্ট মানুষের জন্য আমাদের দাওয়াত নয়। মনে রাখতে হবে সকল মানুষের অধিকার ও হক রয়েছে আমাদের উপরে। এই দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেয়া মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ হতে আমাদের কাছে আমানত। সে লক্ষে প্রত্যেক থানা আমীর সেক্রেটারিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে কঠিনভাবে চাষ করতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে তার মঞ্জিলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। মক্কার কঠিন পরিস্থিতির সময়ে ইসলাম বিজয়ের জন্য আল্লাহর রাসূল (সা) ব্যাক্তির নাম ধরে ধরে তাদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছিলেন। আমাদেরকেও সেভাবে চাইতে হবে। আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন দায়িত্বশীল, আল্লাহর গোলামী করার জন্য আমরা আত্ম-নিবেদিত। এজন্য কুরআনের বিধানের আলোকে নিজেকে তৈরী করে দেশ সমাজ ও জাতি গঠনে আমরা প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাবো। যারা সবসময় আমাদের বিরোধিতা করছেন, আমরা তাদেরকে আমাদের বন্ধু, ভাই-বোনের ন্যায় মনে করি। তাদের হেদায়াতের জন্য আমরা মহান রবের নিকট দোয়া অব্যাহত রাখবো ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে নিজেদেরকে মানসম্পন্ন নেতৃত্বে পরিণত করার মধ্য দিয়ে দুনিয়ার পরিবর্তন সাধন করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। একইসাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের যাবতীয় কর্মতৎপরতা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক এলাকায় ইউনিট কায়েম করতে হবে। মহল্লা কমিটি গুলোকে আরও সু-সংগঠিত করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা চাইলে চরম ও কঠিন অবস্থার পরে আমাদেরকে সহজ ও স্বাভাবিক পরিবেশ উপহার দিতে পারেন। সে প্রত্যাশা আমরা মহান আল্লাহর দরবারে কামনা করছি। আগামীদিনে ইসলামী আন্দোলনের মূলক্ষেত্র হিসেবে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে প্রস্তুত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সকল থানা আমীর ও সেক্রেটারিদের উদাত্ব আহবান জানান।