বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি এবং বাউফলের গণমানুষের নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলাবাসীদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করে বলেন, সকল কলুষতা অহমিকা ভুলে মানুষে মানুষে মানবতা বোধ জাগ্রত হোক, বিবেকের তাড়নায়। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বিপদে-মুসিবতে কষ্টে ফেলে যাচাই করতে চান প্রকৃত অর্থে কে ঈমানের উপরে মজবুত ভাবে টিকে থাকে। সুতরাং কোনো ধরনের বিপদ-আপদ সংশয়ে মুমিনের ভেঙ্গে পড়ার সুযোগ নেই। আল্লাহ আমাকে এটা দেয়নি, ওটা দেয়নি, এমন চিন্তা লালন করা উচিৎ নয়। মূলত পাওয়া অথবা না পাওয়ার মধ্যেও যেন আমরা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। সবর ও শুকরিয়া হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা। জামায়াতে ইসলামী বাউফল উপজেলার উদ্যোগে শীতবস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসময় গণমানুষের নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বাউফল এলাকার অসহায় প্রায় কয়েক শত নারী-পুরুষ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাউফল উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি অধ্যাপক খালিদুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক ছাত্রনেতা মুন্তাসির মুজাহিদ, ছাত্রশিবিরের পটুয়াখালী জেলা সভাপতি আলী আজগর, সেক্রেটারি মাহদী হাসান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাউফল উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম শাখা শিবিরের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ওলামায়েকেরাম ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদগণ।
তিনি আরো বলেন, দেশের জনগণ মনে করেছিল ৭১’ এর মানবতার ইস্যূতে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিয়ে হয়তো দেশ কলঙ্কমুক্ত হবে, এরপরে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আসলে জাতিকে এটা ভুল ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই তাদের উদ্দেশ্য ছিলো সত্যিকার দেশপ্রেমিক প্রত্যেকটি মানুষকে তারা ঘায়েল করে শেষ করে ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। এজন্যই একটার পর একটা নতুন নাটক তারা মঞ্চস্থ করেই চলেছে। আজ দেশের মানুষ বুঝে গেছে এই অবৈধ রাতের ভোটে ক্ষমতায় আসা সরকারের মূল উদ্দেশ্যের কথা। জঙ্গি জঙ্গি ধোয়া তুলে তারা বাংলাদেশকে অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করতে চাই। আমরা বলতে চাই, জামায়াতে ইসলামীর একজন সদস্য-কর্মী তো দূরের কথা কোনো সমর্থক ব্যক্তিও জঙ্গি কাজে কোনো ভাবেই লিপ্ত নয়। এটা দেশের জনগণ হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করে। সেই সাথে জামায়াত ভবিষ্যতেও কোনো রকম উগ্রপন্থায় যাবে এমনটি কল্পনা করাও সমীচীন নয়। আমরা আল্লাহর রাসূল (সা)-এর ইসলামী আন্দোলনের স্বাভাবিক নিয়মেই বাংলাদেশে একটি ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখি। কুরআন এবং হাদিসের আলোকে আমরা রাসূলের প্রেরণায় যেভাবে সংগঠন পদ্ধতি রয়েছে, সেভাবেই জনগণের কল্যাণে তাদের সাথে নিয়ে এদেশে সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। এর বাহিরে ক্ষমতায় যেতে হবে এমন কোনো লালসা জামায়াত কখনই চিন্তা করে না। ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল ফাঁসি, মামলা, হামলা, নির্যাতন করে জামায়াতকে থামিয়ে দেওয়া যাবে। আমরা বলতে চাই, কোনো অপ্রচেষ্টা চালিয়ে জামায়াতের সমাজ কল্যাণকর ও মানবতার এসব কাজ থামিয়ে দেওয়া যাবে না, কখনো করা যায়নি। আমাদের একজন ডা. শফিকুর রহমানকে আটক করে অবৈধ আওয়ামী সরকার ভেবেছে জামায়াতের মানবসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা বলবো আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন বা পাগলের রাজ্যে বসবাস করছেন। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক একজন কর্মী এই সংগঠন পরিচালনার যোগ্যতা অর্জন করেই সংগঠনে সংযুক্ত হন, প্রত্যেক কর্মী জামায়াতকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। জামায়াত কোনো পারিবারিক সংগঠন নয়, জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করা যাবে না। বাউফলবাসীকে একটা শ্লোগান মনে রাখতে হবে “আমরা ভোট আমি দিবো, সৎ এবং যোগ্য লোককে দিবো।” আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বাউফলে বিভিন্ন সময়ে সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করেছি। বাউফলের জনগণের যেকোনো দুর্যোগে-দুর্ভোগে আমরা পাশে আছি থাকবো ইনশাআল্লাহ। সেজন্য এ ধারাকে আরো বেগবান করতে বাউফলবাসীকে আগামী দিনে যোগ্য নেতৃত্বকে বেঁছে নিতে হবে এবং সামনে নেতৃত্ব নির্বাচনের যে সুযোগ আসবে তা যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করতে বাউফলের সাধারণ জনগণের প্রতি তিনি ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান।