যারা বলে কুরআনের সাথে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নাই, আসলে কুরআনের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নাই উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, তারা কুরআন পড়ে না, কুরআন জানে না, কুরআন বুঝে না। তারা বুঝে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র আর পরিবারতন্ত্রের নামে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে রাষ্ট্রের ও জনগণের সম্পদ লুট করতে। কুরআন নাজিল হয়েছে মানবজাতির সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থা কল্যাণের পথে পরিচালনের নিদের্শ বা গাইটলাইন হিসেবে। কুরআন বাদ দিয়ে মানুষের তৈরি যত মতবাদ রয়েছে, আইন করা হয়েছে এসব রাষ্ট্র কিংবা সমাজের জন্য নয়, এসব ক্ষমতাসীনদের সুবিধার জন্য করা। ইসলামের যত বিধান রয়েছে এসব মানব জাতির কল্যাণে।
সোমবার রাতে যাত্রাবাড়ী মধ্য থানা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বাছাইকৃত অগ্রসর কর্মী শিক্ষা বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বাছাইকৃত অগ্রসর কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, অগ্রসর কর্মীরা জামায়াতে ইসলামীর দিকে অগ্রসর হয়নি বরং ইসলাম ও আল্লাহর দিকেই অগ্রসর হয়েছে। রুকনিয়াতের শপথ নেওয়া ঈমানের দায়িত্ব উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, প্রতিটি মানুষ আল্লাহর কাছে শপথ করে দুনিয়াতে এসেছে। ঐ শপথ ছিল আল্লাহর আদেশ-নিদেশ পালনের। দুনিয়ার মোহে আমরা আল্লাহর সাথে করা শপথ ভুলে গিয়ে দায়িত্ব পালন থেকে সরে যাওয়ার কারণেই জামায়াতে ইসলামী ঐ শপথ নবায়ন করার উদ্যোগ নিয়ে রুকন হতে আহ্বান করে। রুকন শপথকারীরা আল্লাহ ভয় অন্তরে লালন ও ধারণ করে। যার ফলে তাদের দ্বারা জনগণের সম্পদ লুট করা সম্ভব হয়। তারা জনগণের দায়িত্বকে আমানত মনে করে। এজন্যই জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দূর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট নেই এবং থাকবে না।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ব্যক্তি সংস্কার ব্যতিত রাষ্ট্র সংস্কারের কোন সুফল জনগণ পাবে না। যতই সংস্কার করা হোক না কেন জাতির প্রত্যাশা পূরণ হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য প্রয়োজন ব্যক্তি ও দলের সংস্কার। যেই নেতা দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট করে তার নৈতিকতার সংস্কার না করে রাষ্ট্রের সংস্কারে কোন কল্যাণ পাওয়া যাবে না। যারা দুর্নীতি করে জনগণের সম্পদ লুট করে তারা চোর। চোর আর চোরের দল দিয়ে এদেশের জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে না। জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বের মত সৎ যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব। যারা জনগণের এক পয়সাও কখনো দুর্নীতি করেনি, করতে দেয়নি।
ড. মাসুদ আরো বলেন, বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এদেশের ছাত্র-জনতা সহ সকল পেশাজীবি ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ কে ক্ষমতাচ্যুত করে বিতাড়িত করেছে। জনগণের সেই প্রত্যাশিত বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গঠন করতে হলে, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ যেই শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে সেই ব্যবস্থায় যেই দলই ক্ষমতা আসুক না কেন বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গঠন হবে না, করা যাবে না। তারাও ফ্যাসিস্ট হয়েই দেশ পরিচালনা করবে। এজন্য জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, মানুষের তৈরি মতবাদে আর কোন ব্যক্তি বা দলকে ভোট দিবে নাকি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসলামের পক্ষে ভোট দিবে। চিরদিন শান্তিতে থাকতে হলে, শান্তি পেতে হলে অবশ্যই ইসলামের পক্ষে ভোট দিয়ে এদেশে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
যাত্রাবাড়ী মধ্য থানা আমীর এডভোকেট এ.কে আজাদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা মো. ইমাম হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বাছাইকৃত অগ্রসর কর্মী শিক্ষা বৈঠকে দারসুল কুরআন পাঠ করেন মাওলানা ফরিদুল ইসলাম। শিক্ষা বৈঠকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ও যাত্রাবাড়ী মধ্য থানার দায়িত্বশীলবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।