বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের এই ভূখন্ড জীবন দিয়ে হলেও আমরা জামায়াতের সদস্যরা রক্ষা করবো সেই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আগামী দিনে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন দিতে দেশবাসীকেও আমরা আহবান জানাচ্ছি। আমরা দেশবাসীকে কথা দিচ্ছি সন্ত্রাস মুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত একটি স্বপ্নের মত সুন্দর বাংলাদেশ আমরা উপহার দিতে চাই। ভিন্ন ধর্মের অনুসারী ভাইদের বলি, আমরা এদেশে কোনো সংখ্যালঘু আছে এমন কিছু মনে করি না। আমরা সকলেই এদেশের বৈধ নাগরিক হিসেবে স্বাধীনতার সুফল আমরা প্রত্যেকে উপভোগ করতে চাই।
আজ জুমাবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পেশাজীবী বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এর সভাপতিত্বে পেশাজীবী সদস্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান আরো বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানাতে চাই, অবিলম্বে ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় সব দায়িত্ব থেকে তাদের অব্যাহতি দিতে হবে। সকল দোসরদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে হবে। আর দেশে যারা সৎ, নিষ্ঠাবান ও বঞ্চিত অফিসার আছেন, দায়িত্ব পালনে সক্ষম আছেন তাদেরকে দ্রুত যথাযথ সম্মান দিয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেন। সেই সাথে দাবি জানাতে চাই দ্রুত নতুন ভোটার তালিকা তৈরির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন অফিস হতে বলা হয়েছে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার হতে হবে। তাদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সরকারী অফিসে বসে তাহলে আপনাদের কাজটা কি? গত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে প্রায় দুই কোটি ভুয়া ভোটার বানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনারগণ আপনাদের দায়িত্ব সম্পর্কে এখনই সচেতন হোন নচেৎ মানুষ আপনাদের ধৃক্কার জানাবে। সামনে সঠিক জনমত প্রকাশের স্বার্থে নতুন ভোটার তালিকা করতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি আগামী দিনে এই বাংলাদেশ হবে ইসলামী আদর্শের আলোকে সত্যিকার আধুনিক বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য আদর্শ মানুষ প্রয়োজন। তাই জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আদর্শ মানুষ তৈরীর কাজ করছে। আগামীতে জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতা চায় না, চায় দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক। ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে সুখী সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশ জাতি ও সমাজের কল্যাণে জামায়াতের সদস্যরা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে সেই প্রতিশ্রুতি আমরা দিচ্ছি। বিগত জুলাই বিপ্লবে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই দেশ নিয়ে আর যেন কেউ ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য আমরা সোচ্চার ভূমিকা পালন করবো দৃঢ় কণ্ঠে তা ঘোষণা করছি। দেশ ও জাতির কল্যাণে আমাদের পেশাজীবীরা হবেন সবার আদর্শের কেন্দ্র বিন্দু। এদেশে ইসলামী আদর্শের বিজয়কে তরান্বিত করতে এবং ছাত্র জনতা যে কারণে জীবন দিয়েছেন সেই বাংলাদেশ গঠনে আমরা অবশ্যই ভূমিকা রাখবো। এই বাংলাদেশে আর কোনো নতুন স্বৈরাচারের উত্থান আমরা হতে দেবো না।