ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা. ও তার সহধর্মিণী আয়েশা রা. সম্পর্কে চরম অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ ৮ জুন ২০২২ বুধবার সকালে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন ও দেলওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, আব্দুর রহমান, মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি মু. আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী তৌহিদুল ইসলাম সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ভারতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল রাসূল সা. কে নিয়ে কটূক্তি করে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কলিজায় আঘাত দিয়েছে। একজন মুসলমানদের কাছে প্রিয়নবী সা. এর সম্মান নিজের জীবনের চেয়েও মূল্যবান। ফলে কোনভাবেই রাসূল সা. এর সামান্যতম অসম্মান আমরা বিশ্বের মুসলমানেরা বরদাশত করতে পারিনা। আমরা ঘৃণার সাথে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করে বিশ্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকার শুধু বিশ্বের জন্য নয় ভারতের জন্যও হুমকি স্বরূপ। রাসুল সা. এর অবমাননার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানালেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো প্রতিবাদ না করায় মুসলিম উম্মাহর অংশ হিসেবে আমরা চরম ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবী জানাই, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে অবিলম্বে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে এবং ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাসুল সা. এর অবমাননার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাসূল (সা.)-এর অবমাননা সর্বকালে অগ্রহণযোগ্য ও সবদিক থেকে ধিক্কারযোগ্য। কোনো সভ্য জাতি বা নেতা কারো মৌলিক বিশ্বাসের উপর এভাবে আঘাত হানতে পারে না। ভারতে রাসূল সা-কে নিয়ে কটূক্তি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা মূলত মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলা ভারতের সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকারের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। এর আগেও ভারতে কুরআনের আয়াত পরিবর্তন চেয়ে রীট করা হয়েছে, মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, মুসলমানদের উপর গণহত্যা, মসজিদ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে এই বিজেপি সরকার। তাদের এসব নীতিহীন অপকর্ম ও কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ শান্তিকামী বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন ফলে আন্তর্জাতিক আদালতেই এর বিচার করতে হবে। তিনি বিজেপি সরকারের মুসলিম নিপীড়ন ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ও.আই.সি সহ মুসলিম রাষ্ট্র সমুহকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহবান জানান।
ড. মাসুদ আরও বলেন, আল্লাহর নবী ও মা আয়েশা সম্পর্কে কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য মূর্খতা ও অজ্ঞতার প্রমাণ। এই নিন্দনীয় কাজ বিশ্বের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে কুঠারাঘাত করেছে। ইতোমধ্যেই মুসলিম বিশ্ব এই অবমাননার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে, চারিদিকে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। দেশে দেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সুপার স্টোর ও শপিং মল থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এটা প্রিয়নবী স.-এর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। আসুন আমরাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রিয় নবী (সা.) এর মর্যাদা রক্ষায় ভারতীয় পণ্য বয়কট ও প্রতিবাদের আওয়াজ তুলি। একইসাথে তিনি ভারতের বিজেপি সরকারকে অন্যের ‘বিশ্বাস ও ধর্মের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে কটূক্তিকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে এঘটনার জন্য মুসলিম বিশ্বের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।