বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি গণমানুষের নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, দেশে ক্ষমতাসীন সরকার নানা উন্নয়নের ঢেকুর তুলে আজ নিজেরাই টালমাটাল মন্তব্যের মধ্যদিয়ে সময় অতিবাহিত করছে। এমতাবস্থায় জামায়াতের কর্মী সমর্থকদের মাত্র দু’টি কাজ সমাজে অব্যাহত রাখতে হবে। এক. জনগণের কল্যাণে একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে হবে, দুই. সমাজে একদল সৎ দক্ষ ও যোগ্য এবং খোদাভীরু নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। সমাজে সৎ লোকের নেতৃত্ব যখন কায়েম হবে তখন আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী হয়ে যায়। ফলে দেশে সৎ যোগ্য ও খোদাভীরু নেতৃত্বই মুক্তির একমাত্র গ্যারান্টি। আমরা একাজ করতে সক্ষম হলেই কেবল আল্লাহর দেওয়া ফায়সালা অর্থাৎ চূড়ান্ত বিজয় মুমিনদের অর্জিত হবে। আজকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ের জন্য সাধারণ মানুষের মাঝে হাহাকার চলছে। কত অমানবিকতা একদিকে মা তার সন্তানকে বাজারে বিক্রি করে দু’মুঠো খাবার ক্রয়ের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে এরকম অবস্থার মধ্যে আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী উপহাস করে বলেন, আমাদের দেশের মানুষ শুধু আরাম আয়েশের মধ্যেই নেই বরং তারা এক রকম বেহেশতে অবস্থান করছি। মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন, দুনিয়ায় দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিরাই মনে করে তারা জান্নাতে আছে বরং তারা কাফের ছাড়া অন্যকিছু নয়।
আজ ২২ আগস্ট ২০২২ বিকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ব্যবসায়িক উপকরণ ও পুঁজি বিতরণ কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য মাওঃ আমিনুল ইসলাম, আব্দুর রহিম জীবন, শাহীন আহমদ খান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা মনে করি দেশের ক্ষমতাসীনরা সীমালংঘনকারী হিসেবে আজ দৃশ্যমান। তারা দেশের সাথে, জাতির সাথে রীতিমতো ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। জনগণের সাথে তামাশা শুরু করেছে। এমতাবস্থায় জামায়াতে ইসলামী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আজকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় কোভিড-১৯ ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য সামান্য কিছু ব্যবসায়িক উপকরণ, নগদ আর্থিক সহযোগিতা, মা-বোনদের মাঝে সেলাই মেশিন, মুদি দোকানের মালামাল, কম্পিউটার, প্রিন্টার সহ ব্যবসায়িক নানা উপকরণ আমরা তুলে দিয়েছি। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সব থানায় আমরা এ-কার্যক্রম অব্যাহতভাবে পরিচালনা করে যাচ্ছি। জামায়াতে ইসলামীর হাতে যদি এদেশের জনগণ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করেন তাহলে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমরা সচেষ্ট থাকব ইনশাআল্লাহ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ আরও বলেন, ইতিহাস থেকে দেশের জনগণ দেখেছে জামায়াতের কৃষিমন্ত্রী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দুইজন সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শুধু তাই নয় তাদের অনুকরণে পরবর্তীতে নানা দেশ তাদের দক্ষতাকে গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব যদি সৎ দক্ষ ও যোগ্য মানুষের হাতে অর্পিত হয় তাহলে জনগণের আশা ভরসা স্বাভাবিক ভাবেই অর্জিত হওয়া সম্ভব। শহীদ মতিউর রহমান নিজামী সাহেব এবং শহীদ আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ভাইয়ের মন্ত্রীত্বে ঈর্স্বান্বিত হয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী গোষ্ঠী তাদেরকে মিথ্যা অজুহাতে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। কারণ তারা মনে করেছে দুনিয়ার প্রতিযোগীতায় অন্যকিছু দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সাথে মোকাবেলা করা গেলেও আদর্শিকভাবে, সততা, যোগ্যতা ও নৈতিকতা দিয়ে জামায়াতের সাথে টিকে থাকা সম্ভব নয়। আমরা সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে আপনারা জামায়াতের সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমকে এক সেকেন্ডের জন্যও বন্ধ করতে সক্ষম হবেন না ইনশাআল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ আমরা শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা নিয়ে মজবুত ভাবে দাঁড়িয়ে আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ।