যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পূর্ব ঘোষিত রাজধানীতে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিশাল গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের মুক্তি, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের সকল ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ১০ দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর আলোকে আজ ৩০শে ডিসেম্বর জুমা’বার নামাজ শেষে রাজধানীর মালিবাগে গণমিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিশাল গণমিছিলটি রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট থেকে শুরু হয়ে আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে খিলগাঁও তালতলা মোড়ে গিয়ে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এই গণমিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, আবু ফাহিম, শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, ড. মোবারক হোসাইন, জয়নাল আবেদীন, আব্দুর রহমান, শেখ শরিফ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি অহিদুল ইসলামসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানা সংগঠনের আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
গণমিছিল পরবর্তী সমাবেশে জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের জনগণের ভোট ও ভাতের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে। দেশে ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠার সেই সংগ্রামে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফাঁসির কাষ্ঠে শাহাদাত বরণ করেছেন। শহীদ নেতৃবৃন্দ জালিমের সাথে আপস করেন নাই। বাংলাদেশের জনগণের সকল অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সামনে কাতারে থেকে জামায়াত জনগণকে সাথে নিয়ে দেশে ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়ন করবে ইনশাআল্লাহ। জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে অবিলম্বে দেশে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে, জনগণের সমর্থন ও প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আজ ঢাকায় জামায়াতের গণমিছিলে লাখ জনতার উপস্থিতি প্রমাণ করে এদেশের জনগণ জামায়াতকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যত কল্পনা করে না। ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবে ছিলো জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিলে, মামলা-হামলা করে জামায়াতকে শেষ করে দিবে। অথচ এতো বাঁধা প্রতিকূলতার মাঝেও জনগণ জামায়াতকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। জামায়াতের ডাকে এই গণমিছিলে তাই লাখো মানুষের উপস্থিতি। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জনগণের ভোট ও ভাতের ন্যায্য অধিকার ফিরেয়ে দেওয়ার আন্দোলন-সংগ্রামে সবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবে। যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দশ দফা দাবি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জনগণের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে আনা হবে। জামায়াত বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক সংগঠন। বর্তমান বাংলাদেশে এটা দলমত নির্বিশেষে সকলে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন। এই জামায়াতকে স্বাভাবিক ভাবে দেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার সুযোগ দিন। বার বার আবেদন করার পরও প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগ বা পরিবেশ না দেওয়া চরম মানবাধিকার ও আইনের শাসনের চরম লঙ্ঘন বলে বিশে^র সচেতন সব মহল মনে করে। জামায়াত ইসলামীকে বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনের আলোকে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক সকল কর্মসূচি পালনের সুযোগ দিতে হবে। আমরা প্রশাসন ও মিডিয়া গণমাধ্যমের বলতে চাই, ‘আসুন দেখুন, এতো বাঁধা-বিপত্তির মাঝেও জামায়াত তার লাখো কর্মী নিয়ে রাজধানী ঢাকায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে।’ আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই, আপনারা আমরা সকলে মিলে এই বাংলাদেশকে একটি সুখি সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই ইনসাফপূর্ণ দেশ গঠনে দলমত ভেদাভেদ ভুলে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঐক্যবদ্ধভাবে আসুন দেশ গড়ার শপথ গ্রহণ করি।