বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, এবারের রমজানে ও ঈদুল ফিতরে ফিলিস্তিনে মুসলমানদেরকে ঘিরে সকল অন্যায় হত্যা ও ইহুদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরাঈলের দমনপীড়নমূলক কর্মকান্ডে পুরো মুসলিম উম্মাহর ঈদের খুশি ম্লান হয়ে গিয়েছে। জেরুজালেম ও মসজিদুল আল আকসা কে ঘিরে ফিলিস্তিনের মুসলমানরা আজ ভয়াবহ পরিস্থির মধ্যে আছেন। ঈমানের বাস্তব পরীক্ষায় দেশটির মুসলিমেরা আজ সম্মুখ সারিতে অবস্থান করছেন। পবিত্র কুরআনের স্বীকৃত স্থান বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের সম্পদ, এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে। সংখ্যা গরিষ্ট্য মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে রাষ্ট্রীয় ভাবে ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে হবে। চরম জুলুম-নির্যাতন ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও একজন মুমিন বান্দা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ধৈর্যের সাথে সামনে এগিয়ে যাবেন, এটাই হলো মূল শিক্ষা। আল্লাহর দ্বীন কায়েমের পথে জান ও মালের সাথে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এমতাবস্থায় বিশেষত মুসলিম প্রধান দেশ সমূহের নেতৃবৃন্দকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে হবে।
শনিবার পটুয়াখালী জেলার বাউফলের একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাউফল উপজেলা আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। পটুয়াখালী বাউফল উপজেলা আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম শিকদারের সভাপতিত্বে ও বাউফল উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক খালিদুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলা আমীর অধ্যাপক শাহ আলম, পটুয়াখালী জেলা সেক্রেটারি অ্যাড. নাজমুল আহসান, বাউফল উপজেলা সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুস সাত্তার, ওলামা বিভাগ নারায়ণগঞ্জ মহানগর সদস্য মুফতি হাফেজ মো. জাকির হোসেন, পটুয়াখালী জেলা ও শহর ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি কবির হোসাইন, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাশার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী অ্যাড. মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের পটুয়াখালী জেলা সভাপতি মু. আল-আমিন, ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নেতা আব্দুল্লাহ আল মানসুর, ছাত্রশিবিরের শহীদ সরোয়ার্দী সরকারি কলেজ নেতা ইমরান হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শিবির নেতা রাসেল মাহমুদ, ঢাকা মহানগরী পূর্ব শিবির নেতা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, বাউফল পূর্ব সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বাউফল পশ্চিম সভাপতি হাফেজ আরিফুর রহমান, বাউফল উত্তর সভাপতি ইকবাল হোসেন রুমি সহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, মু’মিনগণ হবেন অধিক ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, অনুগত, আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয়কারী এবং শেষরাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। রমজান থেকে তাকওয়া অর্জনের এটাই মূল দাবী। আমাদেরকে মুমিনের গুণাবলী অর্জন করে আল্লাহর প্রকৃত বান্দাহ হিসেবে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ অর্জন করতে হবে। আমাদের ক্ষমতাসীন সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জোর জবরদস্তি করে দেশের শীর্ষ আলেমদের জেলখানায় আবদ্ধ করে রেখেছে। সরকারের অদক্ষতায় ঘরমুখো মানুষের হয়রানী এবারের ঈদের আনন্দকেও ম্লান করে দিয়েছে। লকডাউন পরিস্থিতি ও যোগাযোগ সমন্বয়হীনতার কারণে মানুষ নিহতের মত দূর্ঘটনাও ঘটেছে। অন্যদিকে দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ভূখন্ড দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। এমতাবস্থায় দেশের এই ক্রান্তিকালে জামায়াত ও শিবির কর্মীদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজসেবায় আরও জোড়ালো ভূমিকা পালন করতে হবে। সেইসাথে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে যেকোন ত্যাগের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
ড. মাসুদ আরও বলেন, পুরো বিশ্ব আজ যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। বিশেষ করে দেশে দেশে মুসলিমদেরকে গণ্যহত্যা ও দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এদিকে ফিলিস্তিনে স্মরণকালের যে পৈশাচিক-অমানবিক শিশু হত্যা ও মুসলিম নিধন চালাচ্ছে দখলদার ইহুদী ইসরাঈল তা কোনো বিবেকবান মানুষ সহ্য করতে পারে না। অনতিবিলম্বে মুসলমানদেরকে ঘিরে সকল অন্যায় ও দমনপীড়নমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত হয়ে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি বিশ্ব নেতাদের প্রতি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবী জানান। সেইসাথে ফিলিস্তিনের উপর নির্যাতন বন্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য মুসলিমবিশ্বসহ সকল শান্তিকামী রাষ্ট্রের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।